জন্ম কুণ্ডুলীতে সুখের ঘরের মূল্যায়ন
জ্যোতিষ শাস্ত্রে সুখের মূল্যায়ন চতুর্থ ঘর থেকে করা হয়। চতুর্থ ঘর,ঘরের অধিপতি গ্রহ এবং কারক গ্রহের শুভ-অশুভ অবস্থান ও বলাবলের উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয় যে কোন জাতক-জাতিকার সুখের হিসাব। যদি চতুর্থ ঘর ও ঘরের অধিপতি শুভ প্রভাবযুক্ত হয়,তাহলে উক্ত ঘরের বিষয়গুলির ক্ষেত্রে শুভফল লাভ হয়। আর যদি অশুভ প্রভাব যুক্ত হয়,তাহলে বিভিন্ন সমস্যা ও দুঃখ-কষ্টের সন্মুখীন হতে হয়।
সুখের বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর গুরুত্ব
উপরিউক্ত বিচারের বাইরেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বিচার করতে হয়। সেটি হলো যে কোন কুণ্ডুলী বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডলীর বিচার। কালপুরুষ কুণ্ডলীর বিচার ব্যতীত কুণ্ডলী বিশ্লেষণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
মিথুন লগ্ন বা রাশির চতুর্থ ঘরের রাশি হল কন্যা রাশি। যে কন্যা রাশি থেকে কালপুরুষের কুণ্ডলীর ষষ্ঠ ঘরের বিচার করা হয়। কালপুরুষের কুণ্ডলীতে কন্যা রাশিকে একটি নেগেটিভ রাশি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ কন্যা রাশি থেকে কালপুরুষের রোগ, ঋণ এবং শত্রুর বিচার করা হয়।
মিথুন লগ্ন বা রাশির চতুর্থ তথা সুখের ঘরে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর ষষ্ঠ ঘরের মত একটি নেগেটিভ রাশি অবস্থান করায়, স্বভাবতই উক্ত লগ্ন বা রাশির জীবনে সুখ প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত ঘটে। যদি না কন্যা রাশি থেকে শুভ ফল লাভের উপযুক্ত পথ অনুসরণ করে চলা যায় ।
জন্ম কুণ্ডুলীর চতুর্থ ঘর থেকে মানসিক সুখ-শান্তির পাশাপাশি জমি-বাড়ি-গাড়ি,বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রপাতি, ঘরের আসবাবপত্র,মায়ের শরীর স্বাস্থ্য,মায়ের সাথে সম্পর্ক ইত্যাদিরও বিচার করা হয়। যদি চতুর্থ ভাবে কন্যা রাশি অবস্থান করে এবং কন্যা রাশির স্বভাব অনুযায়ী না চলা যায়, তাহলে ওইসব বিষয়গুলির এক বা একাধিক ক্ষেত্র থেকে সমস্যা উৎপন্ন হয়। যেমন মানসিক অশান্তি, দুঃখ-কষ্ট, জমি-জমা নিয়ে সমস্যা, যানবাহন বা যন্ত্রপাতি নিয়ে সমস্যা, বাড়ি নির্মাণে বাধা, মায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বা মায়ের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপোড়েন ইত্যাদি।
সুখের ঘরের শুভফল প্রাপ্তির উপায়
কন্যা রাশি থেকে শুভ ফল পাওয়ার উপায় হল - উক্ত রাশি কুণ্ডলীর যে ঘরে অবস্থান করে,সেই ঘরের বিষয়গুলির করণীয় কর্মে শৃঙ্খলা মেনে কঠোর পরিশ্রম করা। কালপুরুষের কুণ্ডুলীর ষষ্ঠ ঘরের কন্যা রাশি থেকে কালপুরুষের রোগ,ঋণ ও শত্রুর সাথে দৈনন্দিন কর্মেরও বিচার করা হয়।তাই মিথুন লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকাদের চতুর্থ বা সুখের ঘরের দৈনন্দিন করণীয় কর্ম উপযুক্ত শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে করা উচিত।উক্ত ঘরের কর্মক্ষেত্রে যে কোন ধরনের অবহেলা করা কোনও ভাবে উচিত নয়।
তারা তাদের চতুর্থ বা সুখের ঘরের কর্মকে তাদের জীবনের চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করে কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারেন।অবশ্য উক্ত ঘরের কর্মক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা,ন্যায় -নীতি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী।
উপসংহার
শেষে বলা যায় যে মিথুন লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকারদের তাদের সুখের ঘরের বিষয়গুলোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে কঠোর পরিশ্রম ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে সফলতা অর্জনের চেষ্টা করা উচিত। যাতে উক্ত ঘরের প্রত্যেকটি বিষয়ের সুখ লাভ করতে পারেন এবং তারা তাদের জীবনের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারেন ।
0 Comments